প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, দেশের শ্রমিকদের কাজের এবং জীবনযাপনের পরিবেশ উন্নত না হলে “নতুন বাংলাদেশ” গঠনের স্বপ্ন কখনোই বাস্তবায়নযোগ্য হবে না।
বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
“শ্রমিকদের জন্য ভালো পরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের যৌথ দায়িত্ব, এবং এটাই আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ,” বলেন ইউনুস।
তিনি বলেন, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে যে সুপারিশগুলো রয়েছে, তা অত্যন্ত কার্যকর এবং তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সংস্কারের মাধ্যমে নতুন পথচলা
অধ্যাপক ইউনুস বলেন, চলতি বছরের মে দিবস অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে আলাদা, কারণ জুলাইয়ের গণজাগরণ থেকে জন্ম নেওয়া নতুন বাংলাদেশ গঠনের আকাঙ্ক্ষা এখন সবার মাঝে।
“আমরা ইতোমধ্যে সেই পথে যাত্রা শুরু করেছি এবং আশা করি আমরা সফল হবো,” বলেন তিনি।
ঐক্যের মাধ্যমে দেশ গড়ার আহ্বান
শ্রমিক এবং মালিকদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ উন্মুক্ত হয় বলে উল্লেখ করেন ইউনুস।
“মে দিবসের তাৎপর্য হলো শ্রমিক ও মালিকদের বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
“শ্রমিক ও মালিক একসাথে—চলো নতুন দেশ গড়ি”—এবারের মে দিবসের এ প্রতিপাদ্যকেও তিনি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন,
“গার্মেন্ট, কৃষি, শিল্প, নির্মাণ, পরিবহন এবং প্রযুক্তি—প্রতিটি খাতের অগ্রগতির পেছনে শ্রমিক এবং মালিকদের পরিশ্রম ও অংশীদারিত্ব রয়েছে।”
সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশে গুরুত্বারোপ
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস পুনরায় সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন যে, সব শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
“একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ কেবল একটি অধিকার নয়, বরং এটি শিল্প ও অর্থনৈতিক বিকাশের মৌলিক ভিত্তি,” বলেন তিনি।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান, আইএলও মহাপরিচালক (রেকর্ডকৃত বক্তব্য), আইএলও বাংলাদেশের পরিচালক, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস শ্রমিক ও তাদের পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন।
“শ্রমিক ও মালিকের ঐক্য ও সহযোগিতার মাধ্যমেই একটি বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব,” বলেন তিনি।
আরও বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন নিউজ ফ্রন্টলাইন বিডিতে।