বছরখানেক আগে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু হয় আহনাফ তাহমিদ নামের এক শিশুর। এরপর থেকেই শিশুটির পরিবারসহ অনেকের মাঝে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। ফখরুল আলম, শিশুটির বাবা, বলেন—”এদেশের ডাক্তারের ওপর থেকে আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।”
তিনি জানান, তার স্ত্রী অসুস্থ হলেও ডাক্তারের কাছে যেতে রাজি নন। ছোট ছেলের খতনা করানোর সময় হলেও হাসপাতালে নিতে সাহস পাচ্ছেন না। এমন আস্থা সংকটের ঘটনা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় বড় এক প্রশ্ন তুলছে। রোগ নির্ণয়ে ভুল, ভুল রিপোর্ট, পর্যাপ্ত সময় না দেওয়া, বাণিজ্যিক মনোভাব, এবং নজরদারি-জবাবদিহিতার অভাব—সব মিলিয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় গুণগত মানের অভাবই রোগীদের এই সিদ্ধান্তে বাধ্য করছে। ঢাকা মেডিকেলের ডা. শাহনূর শরমিন বলেন, “সঠিক রিপোর্ট না পেলে রোগীর জীবন ঝুঁকিতে পড়ে।”
জনস্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা যায়, একজন ডাক্তার গড়ে রোগীর জন্য মাত্র ৪৮ সেকেন্ড সময় দেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল-এর গবেষণাও বলছে, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই অন্যতম কম সময়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
স্বাস্থ্য খাতে নজরদারির অভাব ও শাস্তির দৃষ্টান্ত না থাকায় বারবার ঘটছে অনিয়ম। ২০২৪ সালে ঢাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনায় শিশুর মৃত্যু হলেও আজও বিচার হয়নি, হাসপাতাল আবারও চালু হয়েছে।
সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, “আস্থা ফেরাতে হলে সেবার মান বাড়াতে হবে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।” না হলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখিতা এবং দেশের অর্থনীতির ক্ষতি—উভয়ই অব্যাহত থাকবে।
⸻ সত্য ও নির্ভরযোগ্য সংবাদের জন্য চোখ রাখুন — নিউজফ্রন্টলাইন বিডি।