সারাদেশ / জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে ডাকসু — ছাত্ররাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ

জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে ডাকসু — ছাত্ররাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ

by নিউজ ফ্রন্টলাইন বিডি ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর হওয়া এবারের নির্বাচন ঘিরে দেশের ছাত্ররাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উচ্ছ্বাস, বিপুলসংখ্যক ভোটার উপস্থিতি এবং দিনভর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ হওয়া এই নির্বাচনের প্রভাব শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর ফল জাতীয় রাজনীতিতে, বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঐতিহ্যগতভাবে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্ব তৈরির আঁতুড়ঘর হিসেবে দেখা হয়। ফলে ডাকসু নির্বাচনের ফল মূল দলের জনপ্রিয়তা ও জনভিত্তির প্রতিফলন হিসেবেও বিবেচিত হয়। বিশ্লেষকদের মতে, এবারের ফল জাতীয় রাজনীতির গতিপথও প্রভাবিত করতে পারে।

মিনি পার্লামেন্ট-খ্যাত ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনে এবার ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ অধিকাংশ পদে এগিয়ে ছিল। ভোটের হার ছিল রেকর্ডসংখ্যক—প্রায় ৮০ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন, যা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনী বাস্তবতায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডাকসু নির্বাচন তরুণদের রাজনৈতিক প্রবণতা যাচাইয়ের একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ৩ কোটিরও বেশি তরুণ ভোটারের অংশগ্রহণ থাকবে—তাদের মতামত কোন আদর্শ ও রাজনৈতিক শক্তির পক্ষে ঝুঁকছে, তা এই ফলাফলে প্রতিফলিত হচ্ছে।

অন্যদিকে, এবারের নির্বাচনে নারী ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বিশেষভাবে চোখে পড়েছে। প্রায় অর্ধেক ভোটারই নারী, এবং ভোটকেন্দ্রগুলোতে তাদের উপস্থিতি ছিল সমানতালে। নিরাপদ ও নিরপেক্ষ পরিবেশে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের কাছে ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

ভোটের আগের দিন থেকে ফল ঘোষণার মুহূর্ত পর্যন্ত সারা দেশজুড়ে ডাকসু ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের আড্ডায়ও এ নির্বাচন ছিল প্রধান বিষয়। ২০১৯ সালের নির্বাচনের হতাশা কাটিয়ে এবারের উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে।

এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছিল নজিরবিহীন নিরাপত্তা। মোবাইল টিম, ডগ স্কোয়াড, বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াত টিম, সিসিটিভি মনিটরিংসহ ছিল নিশ্ছিদ্র নজরদারি। ফলে ভোট ছিল তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ।

বিশ্লেষকদের মতে, ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের এমন বিপুল অংশগ্রহণ প্রমাণ করেছে, আস্থা পেলে তরুণরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে আগ্রহী। তাই এ নির্বাচন শুধু বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির প্রতিচ্ছবি নয়, জাতীয় রাজনীতির জন্যও একটি ইতিবাচক বার্তা হয়ে এসেছে।

সম্পর্কিত খবর

আপনার মন্তব্য দিন

Frontline Bd

আপনার কণ্ঠস্বর, আমাদের দায়িত্ব।
We bring you fearless journalism, breaking stories, and truth from the frontlines.

ফিচার পোস্ট

বিজ্ঞাপন

মূল্য তালিকা (প্রিন্ট ভার্সন)

২০২৫ © Frontline BD কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত