নিউইয়র্ক, সিএনএন —
যুক্তরাষ্ট্রে চীনের তৈরি স্বল্পমূল্যের অনলাইন পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ কার্যকর হওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের জন্য শুরু হয়েছে এক নতুন অর্থনৈতিক বাস্তবতা।
শুক্রবার (৩ মে) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ‘ডি মিনিমিস’ নামে পরিচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ শুল্ক ছাড়ের বিধান বাতিল হয়েছে। এর ফলে ৮০০ মার্কিন ডলারের নিচে মূল্যের পণ্য আমদানিতে যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যেত, তা বন্ধ হয়ে গেছে।
এই বিধানের কারণে আমেরিকানরা শিন (Shein), টেমু (Temu), ও আলি এক্সপ্রেস (AliExpress)-এর মতো চীনা ই-কমার্স সাইট থেকে কম দামে নানা পণ্য কিনতে পারতেন। এখন সেই একই পণ্যের ওপর শুল্ক বসায় দাম বাড়বে দ্বিগুণ বা তারও বেশি।
শুল্ক কত?
চীনা ও হংকং থেকে ইউপিএস, ডিএইচএল বা ফেডএক্সের মাধ্যমে পাঠানো পণ্যে এখন ১৪৫% পর্যন্ত শুল্ক বসছে। ইউএসপিএস (USPS)-এর মাধ্যমে পাঠানো পার্সেলে ১২০% শুল্ক বা প্রতিটি পার্সেলে ১০০ ডলারের ফ্ল্যাট ফি আরোপ করা হয়েছে, যা ১ জুন থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ২০০ ডলার।
চাপ বাড়ছে সাধারণ আমেরিকানদের ওপর
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (CBP) জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখ ডি মিনিমিস পার্সেল প্রক্রিয়াজাত করে, যার বড় একটি অংশই চীন ও হংকং থেকে আসে। ২০২২ সালে মোট ই-কমার্স পণ্যের ৮০% ছিল এই ধরণের শুল্কমুক্ত আমদানির আওতায়।
এই পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিম্নআয়ের মানুষ। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডি মিনিমিস প্যাকেজের ৪৮% সবচেয়ে গরিব এলাকায় পাঠানো হয়, যেখানে ধনীদের এলাকায় এই হার ২২%।
প্রতিক্রিয়া ও শঙ্কা
শিন ও টেমু ইতোমধ্যেই পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। তাদের মতে, নতুন নিয়মের কারণে তাদের ব্যয় বেড়েছে, তাই দাম বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে “বড় প্রতারণা” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “আমরা এর শেষ টেনেছি।”
তবে সিএনএনের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন নাগরিকদের ৫৯% মনে করেন, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতিগুলো দেশের অর্থনীতি খারাপ করেছে।
বর্তমানে, এই নতুন শুল্কনীতি সরাসরি ক্রয়ের রসিদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
⸻ সত্য ও নির্ভরযোগ্য সংবাদের জন্য চোখ রাখুন — নিউজফ্রন্টলাইন বিডি।