দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের সাতটি টার্মিনালের মধ্যে পাঁচটি টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে বা চুক্তি প্রক্রিয়াধীন। স্থানীয় ও জাতীয় স্তরে এতে জাতীয় স্বার্থ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা ও মাশুল বৃদ্ধির ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
লালদিয়ার চর ও পানগাঁও নৌ টার্মিনালের ৩০ বছরের ইজারা চুক্তি ইতিমধ্যে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। লালদিয়ার ক্ষেত্রে ডেনমার্কভিত্তিক এপিএম টার্মিনালস এবং পানগাঁও নৌ টার্মিনাল সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মেডলগ এসএ পরিচালনা করবে। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) নিয়ন্ত্রণ বিদেশি অপারেটরের হাতে চলে গেলে দেশের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় বে টার্মিনাল পরিচালনা করবে আবুধাবির ডিপি ওয়ার্ল্ড ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আরএসজিটি পরিচালনা করছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতারা বলেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে বন্দরের ট্যারিফ, ফি ও মাশুলের নিয়ন্ত্রণ বিদেশিদের হাতে চলে গেলে দেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশিদের হাতে গেলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বড় অংশ বিদেশে চলে যাবে।
চট্টগ্রাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সরকার অবিলম্বে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামে শ্রমিক কনভেনশন থেকে হরতাল ও ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাংক রোড অবরোধসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে, বন্দরের কিছু অংশ বিদেশি অপারেটরের হাতে চলে যাওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে মশাল মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শ্রমিকরা স্লোগান দিয়েছেন, ‘আমার বন্দর আমার মা, বিদেশিদের দেব না’, ‘ডিপি ওয়ার্ল্ড, গো ব্যাক’ ইত্যাদি।
শ্রমিক নেতারা আরও জানিয়েছেন, এনসিটি ও সিসিটি বিদেশি অপারেটরের হাতে গেলে দেশের কোটি কোটি টাকার মুনাফা দেশের বাইরে চলে যাবে। সরকারের কাছ থেকে চুক্তি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।