সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতি থমকে গেছে। কারণ হিসেবে তদন্তে নিয়োজিত টাস্কফোর্স জানিয়েছে, অপরাধস্থল থেকে প্রাপ্ত ডিএনএ নমুনা মিশ্র ও অস্পষ্ট হওয়ায় হত্যাকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
গত ২২ এপ্রিল হাইকোর্টে দাখিলকৃত অগ্রগতি প্রতিবেদনে টাস্কফোর্স এ কথা জানিয়েছে এবং তদন্ত সম্পূর্ণ করতে আরও সময় চেয়েছে। টাস্কফোর্সের একটি সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে দম্পতিকে পশ্চিম রাজাবাজারের তাদের ভাড়া বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয় একটি কিচেন নাইফ ও একটি চাপাতি, যা ঘটনাস্থল থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, সাগর-রুনি হত্যার সময় তারা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন এবং তাদের পাঁচ বছর বয়সী সন্তানও একই ঘরে ছিল। প্রথমে সাগর এবং পরে রুনিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। মারাত্মক আঘাত পেলেও দুজনেই কিছু সময় জীবিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের সময় ঘরে অন্য কেউ ছিল না এবং দরজা ভেঙে প্রবেশের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান ও টাস্কফোর্সের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. মোস্তফা কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “হাইকোর্ট আমাদের কাছে তদন্তের অগ্রগতি জানতে চেয়েছিল। আমরা আদালতকে জানিয়েছি, এই ঘটনার এক দশক পেরিয়ে গেছে, তাই তদন্তে সময় লাগছে। আমরা যেটা জমা দিয়েছি, সেটা চূড়ান্ত কোনো প্রতিবেদন নয়। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অভিজ্ঞ সদস্যদের নিয়ে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয় এবং র্যাবের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব এই টাস্কফোর্সে হস্তান্তরের আদেশ দেয়।
তদন্ত শেষ করে ৩১ মার্চের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও এখনও তা পূর্ণাঙ্গভাবে শেষ হয়নি। এ পর্যন্ত ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে সাতজন সাংবাদিক রয়েছেন।
পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ২২ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে।
রুনির ভাই নওশের আলম রোমান এই প্রসঙ্গে বলেন, “টাস্কফোর্সের কাছে এখনো হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। আমরা এখনও অন্ধকারে। আমরা সত্য জানতে চাই।”
উল্লেখ্য, সাগর ছিলেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাসরাঙ্গার নিউজ এডিটর এবং রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তাদের রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন করা হয়। পরদিন রুনির ভাই শেরেবাংলা নগর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
⸻ সত্য ও নির্ভরযোগ্য সংবাদের জন্য চোখ রাখুন — নিউজফ্রন্টলাইন বিডি।