প্রতিদিনের মতোই চলছিল ক্লাস। ছাত্রছাত্রীরা কেউ মনোযোগ দিয়ে পড়ছিল, কেউবা ভাবছিল কখন ছুটি হবে। কিন্তু হঠাৎই সেই স্বাভাবিকতা এক ভয়ংকর ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান। বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই আগুনে পুড়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি অংশ।
জুনিয়র সেকশনের অনেক শিক্ষার্থী তখন শ্রেণিকক্ষে। কিছু শিক্ষার্থী সেখানেই পুড়ে মারা যায়, কেউবা আগুনে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে, আবার কেউ আতঙ্ক আর দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে ফিরে যায়।
রাইয়ান (১৪), অষ্টম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী, সেদিন ক্লাসে ছিল। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর শরীরে আগুন নিয়ে সে দৌঁড়ে স্কুল মাঠে আসে এবং বালিতে গড়াগড়ি দিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা রাইয়ান বর্তমানে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
রাইয়ানের ফুফা হুমায়ুন কবির জানান, “সে ক্লাসে ছিল। হঠাৎ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন লাগে, তখনই রাইয়ান দৌঁড়ে আসে। শরীরে আগুন থাকায় সে বালিতে গড়াগড়ি করে আগুন নেভায়। এ সময় থুতনিও কেটে যায়।”
রাইয়ান শান্ত স্বভাবের ছেলে এবং পড়াশোনাতেও ভালো ছিল বলে জানান তার পরিবার। বর্তমানে হাসপাতালের মেডিকেল হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পরই বলা যাবে সে শঙ্কামুক্ত কিনা।
এ ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার এবং দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
⸻ সত্য ও নির্ভরযোগ্য সংবাদের জন্য চোখ রাখুন — নিউজফ্রন্টলাইন বিডি।