টিউলিপ সিদ্দিকের করা দাবি—তিনি নাকি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি—এটি ‘সম্পূর্ণ অসত্য’ বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) রাতে দুদক চেয়ারম্যানের পক্ষে উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দুদক জানায়, টিউলিপ সিদ্দিকীকে আইন অনুযায়ী সব সুযোগই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির হননি, এমনকি কোনো প্রতিনিধি আইনজীবীও নিয়োগ দেননি। ফলে তার অনুপস্থিতিতেই (in absentia) বিচার করা হয়।
📌 অভিযোগ প্রমাণিত—বলছে দুদক
দুদক বলছে, মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে—টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো স্পষ্ট, সুস্পষ্ট এবং অখণ্ডভাবে প্রমাণিত।
তার বিরুদ্ধে দায়ের মামলাগুলোর ভিত্তি—
ঢাকার গুলশানসহ অভিজাত এলাকায় তার মা শেখ রেহানা, খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে সরকারি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার।
এমনকি টিউলিপ সিদ্দিক নিজেও অতিরিক্ত একটি প্লট বরাদ্দ পান বলে নথিতে উল্লেখ রয়েছে।
📌 বিশেষ মামলা নং ১৮/২০২৫–এর রায়
তিনটি মামলার মধ্যে একটি—বিশেষ মামলা নং ১৮/২০২৫—এর রায় ইতোমধ্যে ঘোষণা হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল–৫ মামলায় টিউলিপ সিদ্দিককে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
রাষ্ট্রপক্ষ এখানে ৩২ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। বহু সাক্ষী আদালতকে জানান—
টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর উচ্চপর্যায়ের আত্মীয়তার সম্পর্ক ব্যবহার করে সরকারি বরাদ্দকে প্রভাবিত করেছিলেন।
সরকারি নথি, সাক্ষ্য এবং সংশ্লিষ্ট জমির বরাদ্দ প্রমাণ বিশ্লেষণ করে আদালত তার সম্পৃক্ততা “নিশ্চিত” বলে রায়ে উল্লেখ করে।
📌 সরকারি সম্পদ ব্যক্তি পরিবারের হাতে—দুদকের মন্তব্য
দুদকের মতে, এসব প্লট ছিল সরকারি ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত।
কিন্তু সেগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয় ক্ষমতাসীন পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের। ফলে সরকারি সম্পদ ব্যক্তিগত মালিকানায় চলে যায়।
এ ছাড়া দুদক জানায়—
টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের লন্ডনের অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে অর্জিত একাধিক সম্পত্তির তথ্যও নথিতে পাওয়া গেছে, যা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।
📌 আদালতে হাজির না হওয়ার কারণেই অনুপস্থিতিতে বিচার
দুদক স্পষ্টভাবে বলেছে—
টিউলিপ সিদ্দিকের দাবি যে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি, এটি “সম্পূর্ণ অসত্য”।
আইনগত সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি হাজির হননি কিংবা কোনো প্রতিনিধি নিয়োগ দেননি। তাই বাধ্য হয়েই তার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ সম্পন্ন করা হয়।
📌 অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়—দুদক
সব উপলব্ধ প্রমাণ বিশ্লেষণ করে দুদক জানিয়েছে—
টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতিতে সরাসরি জড়িত ছিলেন—এ বিষয়ে কোনো সন্দেহের সুযোগ নেই।
তার দাবি—‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’—এমন দাবি করার মতো কোনো আইনি বা বাস্তব ভিত্তি নেই বলে দুদক মন্তব্য করেছে।